বুধবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২২

শুক্রবার, ২০ আগস্ট, ২০২১

আরশের ছায়া

আরশের ছায়া পাবে কারা?

                


     রশ হল রাজার সিংহাসন। শরীয়তে আরশ বলা হয় সেই মহাসনকে, যার উপর মহান আল্লাহ সমারূঢ় আছেন। এই আরশ হল মহান আল্লাহর সবচেয়ে বড় সৃষ্টি। মহানবী বলেন, “কুরসীর তুলনায় সাত আসমান হল ময়দানে পড়ে থাকা একটি বালার মত। আর আরশের তুলনায় কুরসী হল ঐরূপ বালার মত!” (সিলসিলাহ সহীহাহ ১০৯ নং)


ইবনে আব্বাস বলেন, 'কুরসী হল মহান আল্লাহর পা রাখার জায়গা।' (মুখতাসারুল উলু ১/৭৫)


মহান আল্লাহ সেই কুরসীর বিশালতা সম্বন্ধে বলেন, وسع كرسيه السماوات والأرض ولا يؤوده حفظهما وهو العلى العظيم} অর্থাৎ, তাঁর কুরসী আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী পরিব্যাপ্ত। আর সেগুলির


রক্ষণাবেক্ষণ তাঁকে ক্লান্ত করে না। তিনি সুউচ্চ, মহামহিম। (সূরা বাক্বারাহ ২৫৫ আয়াত)


এই মহা আরশের পায়া ও প্রান্ত আছে। মহানবী বলেন, “নবীদের মধ্যে এককে অপরের উপর প্রাধান্য দিয়ো না। যেহেতু কিয়ামতের দিন মানুষ মূর্ছিত হয়ে পড়বে। অতঃপর আমি সর্বপ্রথম কবর থেকে উঠে দেখব মূসা আরশের পায়াসমূহের একটি পায়া (অন্য এক বর্ণনা মতে আরশের এক প্রান্ত) ধরে আছেন। অতএব জানি না যে, তিনি মূর্ছিত হয়েছিলেন অথবা (আল্লাহকে দেখতে চাওয়ার সময়) মূর্ছিত হওয়ার বিনিময়ে তিনি মূর্ছিত হননি।” (বুখারী, মুসলিম) মহান আল্লাহ বলেন,


{وترى الملائكة حافين من حول العرش يسبحون بحمد ربهـم وقـضي بينهم بالحق وقيل الحمد لله رب العالمين} (٧٥) سورة الزمر

 অর্থাৎ, তুমি ফিরিশ্তাদেরকে দেখতে পাবে যে, ওরা আরশের চারিপাশঘিরে ওদের প্রতিপালকের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছে। ন্যায়ের সঙ্গে সকলের বিচার করা হবে; আর বলা হবে, ‘সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর প্রাপ্য।' (সূরা যুমার ৭৫ আয়াত)


الذين يحملون العرش ومن حوله يسبحون بحمد ربهم ويؤمنـون بـه ويستغفرون للذين آمنوا ربنا وسعت كل شيء رحمة وعلما فاغفر للـدين تابوا والبغوا سبيلك وفهم عذاب الجحيم} (۷) سورة غافر


অর্থাৎ, যারা আরশ ধারণ ক'রে আছে এবং যারা এর চারিপাশ ঘিরে আছে, তারা তাদের প্রতিপালকের পবিত্রতা ও মহিমা প্রশংসার সাথে ঘোষণা করে এবং তাতে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং বিশ্বাসীদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা ক’রে বলে, 'হে আমাদের প্রতিপালক! তোমার দয়া ও জ্ঞান সর্বব্যাপী; অতএব যারা তওবা করে ও তোমার পথ অবলম্বন করে, তুমি তাদেরকে ক্ষমা কর এবং জাহান্নামের শাস্তি হতে রক্ষা কর। (সুরা মু'মিন ৭ আয়াত)


আরশ বহনকারী নির্দিষ্ট ফিরিশতা আছেন। (সূরা মু'মিন ৭, হা-াহ ১৭ আয়াত)


কিয়ামতে আরশের ছায়া হবে।


কিয়ামতের ভয়ানক সেই দিন। যেদিন সূর্য অতি নিকটে হবে। আর তার কারণে মানুষ অত্যন্ত ঘর্মসিক্ত হবে। স্বেদস্রাবে আমল অনুযায়ী কারো পায়ের গ্রন্থি অবধি, কারো হাঁটু অবধি, কারো কটি অবধি, কারো বা নাসিকা (ও কর্ণ) পর্যন্ত ডুবন্ত হবে। মাটির নিচে সেই ঘাম পৌঁছবে ৭০


রাসূলুল্লাহ বলেছেন, কিয়ামতের দিন লোকেরা বিশ্বজাহানের প্রতিপালকের সামনে দন্ডায়মান হবে (এবং তাদের এত বেশি ঘাম হবে যে,) তাদের মধ্যে কেউ তার ঘামে তার অর্ধেক কান পর্যন্ত ডুবে যাবে। (বুখারী ও মুসলিম)


তিনি বলেন, “কিয়ামতের দিন সূর্যকে সৃষ্টজীবের এত কাছে করে দেওয়া হবে যে, তার মধ্যে এবং সৃষ্টজীবের মধ্যে মাত্র এক মাইলের বাবধান থাকবে।” মিকুদাদ থেকে বর্ণনাকারী সুলাইম বিন আমের বলেন, আল্লাহর কসম! আমি জানিনা যে, নবী মীল' শব্দের কি অর্থ নিয়েছেন, যমীনের দূরত্ব (মাইল), নাকি (সুরমাদানীর) শলাকা যার দ্বারা চোখে সুরমা লাগানো হয়? “সুতরাং মানুষ নিজ নিজ আমল অনুযায়ী ঘামে ডুবতে থাকবে। তাদের মধ্যে কারো তার পায়ের গাঁট পর্যন্ত, কারো হাঁটু পর্যন্ত (ঘাম হবে) এবং তাদের মধ্যে কিছু এমন লোকও হবে যাদেরকে থাম লাগাম লাগিয়ে দেবে।” (অর্থাৎ, নাক পর্যন্ত ঘামে ডুববে।) এ কথা বলে রাসূলুল্লাহ তাঁর মুখের দিকে ইশারা করলেন। (মুসলিম) তিনি আরো বলেন, কিয়ামতের দিন মানুষের প্রচণ্ড ঘাম হবে। এমনকি


তাদের থাম যমীনে সত্তর হাত পর্যন্ত নিচে যাবে। আর তাদের মুখ পর্যন্ত ঘামে নিমজ্জিত থাকবে। এমন কি কান পর্যন্তও। (বুখারী ও মুসলিম) বলা বাহুল্য, কিয়ামতের সেই কঠিন রৌদ্রতপ্ত দিনে ছায়ার প্রয়োজন আছে। কিন্তু এত বিশাল আরশ হওয়া সত্ত্বেও সবার ভাগ্যে তার ছায়া


জুটবে না। যদিও আরশ সকল সৃষ্টির ঊর্ধ্বে, তবুও মহান আল্লাহর খাস সৃষ্টি হবে সে ছায়া। যেমন সেদিন সাদকার ছায়া হবে এবং প্রত্যেক সাদকাকারী সেই ছায়ায় অবস্থান করবে।


আল্লাহর রসূল বলেন, “কিয়ামতের মাঠে রৌদ্রতপ্ত দিনে) সমস্ত লোকেদের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রত্যেক মানুষ নিজ সাদকার ছায়াতলে অবস্থান করবে।” (আহমাদ, ইবনে খুযাইমাহ, ইবনে হিলান, সহীহ তারগীৰ৮৭২ নং)


আল্লাহর রসূল বলেন, “সদকাহ অবশ্যই কবরবাসীর কবরের উত্তাপ ঠান্ডা করে দেবে এবং মুমিন কিয়ামতে তার ছায়াতে অবস্থান করবে।” (তাবারানীর কাবীর, বাইহাকী, সহীহ তারগীব ৮৭৩নং) কিন্তু কারা হবে সেই সৌভাগ্যবান ব্যক্তি, যারা কিয়ামতে আরশের ছায়া পেয়ে সেই নিকটবর্তী সূর্যের উত্তাপ থেকে মুক্তিলাভ করবে? আল্লাহর রসুল বলেছেন,

(سبعة يظلهم الله تعالى في ظله يوم لا ظل إلا ظله إمام عدل وشاب نشأ في عبادة الله ورجل قلبه معلق في المساجد ورجلان تحابا في الله اجتمعا عليه وتفرقا عليه ورجل دعته امرأة ذات منصب وجمال فقال إلى أخـاف الـه ورجل تصدق بصدقة فأخفاها حتى لا تعلم شماله ما تنفق يمينه ورجل ذكر الله خاليا ففاضت عيناه). متفق عليه


অর্থাৎ, আল্লাহ তাআলা সাত ব্যক্তিকে সেই (কিয়ামতের) দিনে তাঁর (আরশের) ছায়া দান করবেন, যেদিন তার ছায়া ব্যতীত আর কোন ছায়া থাকবে না, (তারা হল) :


১। ন্যায় প্রায়ণ বাদশাহ (রাষ্ট্রনেতা)।


২। সেই যুবক, যার যৌবন আল্লাহর ইবাদতে অতিবাহিত হয়। ৩। সেই ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদসমূহের সাথে লটকে থাকে (মসজিদের প্রতি তার মন সদা আকৃষ্ট থাকে।)


৪৷ সেই দুই ব্যক্তি যারা আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্যে বন্ধুত্ব ও ভালবাসা স্থাপন করে, যারা এই ভালবাসার উপর মিলিত হয় এবং এই ভালবাসার উপরেই চিরবিচ্ছিন্ন (তাদের মৃত্যু) হয়।


৫। সেই বাক্তি যাকে কোন কুলকামিনী সুন্দরী (অবৈধ যৌন-মিলনের উদ্দেশ্যে) আহবান করে, কিন্তু সে বলে, “আমি আল্লাহকে ভয় করি।”


৬। সেই ব্যক্তি যে দান ক'রে গোপন করে, এমনকি তার ডান হাত যা প্রদান করে, তা তার বাম হাত পর্যন্তও জানতে পারে না।


৭। সেই ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে; ফলে তার উভয় চোখে


পানি বয়ে যায়। (বুখারী ৬৬০নং, মুসলিম ১০৩ ১০


অবশ্য উক্ত সাত প্রকার বাক্তি ছাড়া আরও এক প্রকার মুসলিম আরশের ছায়া পাবে, যারা মানুষকে ঋণ দেয় এবং ঋণ পরিশোধে অক্ষম বাক্তিকে সময় দেয়, অথবা তার ঋণ মকুব ক'রে দেয়। আল্লাহর রসূল ধ্রু বলেন, “যে ব্যক্তি ঋণ পরিশোধে অক্ষম ব্যক্তিকেসময় দেলে, অথবা তার ঋণ মঞ্জুর করে দেবে, কে সেই দিন তাঁর আরশের ছায়া পান করবেন, যে দিন তার সেই ছায়া কোন ছায়া থাকবে না।" (সমী, সহ ৬১০৯ প্রিয় পাঠক! আপনি যদি সেই কঠিন রোগ থেকে বাঁচতে চান, তাহলে


সেই চরিত্র তৈরি করুন, যার ফলে আরশের ছায়া লাভ করবেন। আসুন! আরো বিস্তারিতভাবে সেই চরিত্র ও কর্মাবলীর কথা আলোচনা

বুধবার, ৩ মার্চ, ২০২১

দাওয়াতী কাজের মহত্ত্ব

 দাওয়াতী কাজের বড় মহত্ত্ব রয়েছ ইসলামে।যেহেতু এ কাজ হল মহ্ত লোকের কাজ। দায়ী দাওয়াত দেয় সব চেয়ে বড় যিনি ,তার দিকে । অতএব তার একাজ অবশ্যই বড় । সে নিজ কোথা দিয়ে আহব্বান করে তাঁর দিকে ,যিনি আকবার অ আজিম ,আলা অ আজাল্ল । অতএব তার কথা সব চেয়ে উত্তম শ্রেষ্ঠ । মহান আল্লাহ বলছেন,

        "যে ব্যাক্তি আল্লাহর দিকে মানুষ আহব্বান করে,সৎ কাজ করে এবং বলে 'আমি তো আত্মসমর্পণ কারী (মুসলিম)' তার অপেক্ষা কথায় উত্তম আর কোন ব্যাক্তি?"(সূরা:হা-মিম সাজদাহ:33)

  দাওয়াত দেওয়ার কাজ সাদ্ধ অনুযায়ী  অজিব।মহান আল্লাহ তার নাবিকে দাওয়াত দিতে আদেশ করেছিলেন ।আর সে আদেশ সকল উম্মতের জন্য। মহিলা পুরুষ আবাল ব্রিদ্ধ-বনিতা নির্বিশেষে সকলের জন্য।মজআন আল্লাহ বলেন,https://amzn.to/2NPeLsE

           "তুমি মানুষ কে তোমার প্রতিপালকের দিকে আহব্বান করো হিক্মাত অ সদুপদেশ দ্বারা এবং তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করো সদ্ভাবে।নিশ্ছই তোমার প্রতিপালক ,তার পথ ছেড়ে কে বিপথগামি হয় ,সে বিষয়ে সবিশেষ অবহিত এবং কে সপথে আছে তাও স বিশেস অবহিত।"(সূরা:নাহলে;:125)

তুমি তাদেরকে তােমার প্রতিপালকের দিকে আহবান কর । নিশ্চয় তুমি সৎم পথেই প্রতিষ্ঠিত। ( হাজ্জঃ৬৭) ولا يدئك عن آيات الله بعد إذ أنزلت إليك وادع إلى ربك ولا تكون من المشركين } ( ۸۷ ) سورة القصص অর্থাৎ , তােমার প্রতি আল্লাহর আয়াত অবতীর্ণ করার পর ওরা যেন তােমাকে কিছুতেই সেগুলি হতে বিমুখ না করে ফেলে । তুমি তােমার প্রতিপালকের দিকে তাহবান কর এবং কিছুতেই অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হয়াে না । ( সুরা:ক্বাস্বাস: ৮৭ ) দাওয়াতের কাজ আম্বিয়ার কাজ , রসূলগণের বৃত্তি , তাদের বিনই ছিল দাওয়াতী জীবন । মহান আল্লাহ বলেন ادع إلى سبيل ربك بالحكمة والموعظة الحسنة وجادلهم بالت هي أحسن إن ربك هو أعلم بمن ضل عن سبيله وهو أعلم بالمهتدين } ( ۱۲۰ ) النحل । অর্থাৎ , অবশ্যই আমি প্রত্যেক জাতির মধ্যে রসূল পাঠিয়েছি এই নির্দেশ দিয়ে যে , তােমরা আল্লাহর উপাসনা কর ও তাগূত থেকে দূরে থাক । অতঃপর তাদের কতককে আল্লাহ সৎপথে পরিচালিত করেন এবং তাদের কতকের উপর ভ্রষ্টতা অবধারিত হয় । সুতরাং তােমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ করে দেখ , যারা সত্যকে মিথ্যা বলেছে তাদের পরিণাম কী হয়েছে । ( নাহল : ৩৬ ) এ মহান কাজ নবীর অনুসারীদেরও । যা নবীকে নবী বলে মানে এবং মানার মতাে মানে , তারা সব কাজে যথাসাধ্য অনুসরণ করে । মহান আল্লাহ বলেন , قل هذه سبيلي أدعو إلى الله على بصيرة أنا ومن اتبعني وسبحان الله وما أنا من المتر كين } ( ۱۰۸ ) سورة يوسف » অর্থাৎ , তুমি বল , এটাই আমার পথ । তাড়াহর প্রতি মানুষকে আহবান করি সজ্ঞানে আমি এবং আমার অনুসারিগণও । আঃহ পবিত্র । আর আমি অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত নই । (সূরা; উসুফ:108) আরো বলেন, হে আমার সম্প্রদায় ! কি আশ্চর্য ! আমি তােমাদের আহবান করছি মুক্তির দিকে ; আর তােমরা আমাকে আহবান করছ জাহান্নামের দিকে । তােমরা আমাকে আহবান করছ , যাতে আমি আল্লাহকে অস্বীকার করি এবং এমন কিছুকে তার সমকক্ষ স্থির করি , যার সম্বন্ধে আমার কোন জ্ঞান নেই , পক্ষান্তরে আমি তােমাদেরকে আহবান করছি পরাক্রমশালী পরম ক্ষমাশীল আল্লাহর দিকে । ( মু'মিনঃ ৪১-৪২ ) না , সবাই পারেনা । এক এক মানুষের এক এক রকম পেশা, এক এক রকম নেশা। কাউকে ব্যবসা করতে হবে , আর সেই ব্যবসার ফাকেই দাওয়াতের কাজ হবে । তবে ব্যবসা তার পেশা । কেউ মুজাহিদ হবে , আল্লাহর রাস্তায় বিভিন্ন জিহাদ ও সংগ্রাম করবে । জিহাদই তার পেশা । কেউ পেশাদার চাষী হবে , ইঞ্জিনিয়ার হবে , বিচারপতি হবে , চিকিৎসক হবে , আর পেশার মাঝে সাধ্যানুসারে দাওয়াতী কাজ করবে । কেউ ফকীহ হবে । দ্বিীনী ইলম , দর্স - তাস্রিদ ও ফিকহই হবে তার পেশা । অর্থাৎ , বিশ্বাসীদের জন্য সঙ্গত নয় যে , তারা ( জিহাদের জন্য ) সবাই একত্রে বের হয়ে পড়ে , সুতরাং তাদের প্রত্যেকটি বড় দল হতে এক একটি ছােট দল বহির্গত হয় না কেন , যাতে অবশিষ্ট লােক ধর্মজ্ঞান অর্জন করতে থাকে এবং যাতে তারা নিজ সম্প্রদায়ের নিট ফিরে এলে তাদেরকে সতর্ক করতে পারে । যাতে তারা সাবধান হতে পারে । ( তাওবাহঃ ১২২ ) ইলম অর্জন করে কেউ দাঈ হবে , দাওয়াতের কাজই হবে তার পেশা ।। . * 5 # 19 ) অর্থাৎ , তােমাদের মধ্যে এমন একটি দল থাকা উচিত , যারা ( লােককে ) কল্যাণের দিকে ত্যাহবান করবে এবং সৎকার্যের নির্দেশ দেরে ও অসৎ কার্য থেকে নিষেধ করবে । আর এ সকল লােকই হারে সফলকাম । ( আলে ইমরানঃ ১০৪ ) যে কাজে আল্লাহর তাদেশ , সে কাজের মাহাত্ম্য কি কম বলা যায় ? মহানবী ৪ খায়বারের দিন আলী বিন আবী তালেব - কে বলেছিলেন , “ তুমি ধীর - স্থিরভাবে যাত্রা করে তাদের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে উপস্থিত হও । অতঃপর তাদেরকে ইসলামের দিকে আহবান কর এবং ইসলামে তাদের উপর মহান আল্লাহর কী কী অধিকার এসে বর্তাবে , তা তাদেরকে অবহিত কর । আল্লাহর কসম ! তোমার মাধ্যমে আল্লাহ যদি একটি লােককেও হিদায়াত করেন , তাহলে তা তােমার জন্য লাল উটনী ( আরবের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ ) অপেক্ষ । উত্তম । ” ( বুখারী ৩৭৫৪ মুসলিম ২৪০৬ নং ) পাওয়াতের কাজ সফল হলে , তাতে রয়েছে বহুগুণ সওয়াব । কেউ যদি দাওয়াতের মাধ্যমে একটি বেনামাযীকে নামাযী বানায় , তাহলে দাঈ ঐ নাম্যহরি নামাযের সওয়াব পাবে । কেউ যদি দাওয়াতের মাধ্যমে কোন বেরােযাদারকে রােযাদার বানায় , তাহলে দাঈও রােযাদারের রো । রাখার সওয়াব পাবে । কেউ যদি দাওয়াতের নামে কোন লোককে হাজী বানায় , তাহলে দাও হজের সওয়াব পাবে । অনুরূপ সকল সংকসে ক্ষেত্রে এই বিধান । আল্লাহর রসূল * বলেছেন , “ যে ব্যক্তি সংপণের দিকে আহবান করে ( দাওয়াত দেয়া ) , সে ব্যক্তি ঐ পরে তানুসারীদের সমপরিমাণ সওয়াব লাভ হবে । এতে তাদের সওয়াব থেকে কিছু মাত্র কম হবে না । আর যে । ব্যক্তি অসৎ পথের দিকে আহবান করে , সেই ব্যক্তির ঐ পথের অনুসারীদের সমপরিমাণ গােনাহর ভাগী হবে । এতে তাদের গােনাহ থেকে কিছুমাত্র কম হবে না । ” ( মুসলিমঃ ২৬৭ ৫ নং প্রমুখ ) ইবনে মাসউদ ৭৯ বলেন , এক ব্যক্তি নবী -এর নিকট এসে যাত্রা করল । তিনি বললেন , “ তামার কাছে এমন কিছু নেই , মা আমি তােমাকে দান করব । তবে তুমি অমুকের নিকট যাও । ” সে ঐ লােকটির নিকট গেল । লােকটি তাকে দান করল । এ দেশে তালাহ রসূল 24 বললেন , “ যে ব্যক্তি কল্যাণের প্রতি পথনির্দেশ করে , তার জন্য ঐ কল্যাণ সম্পাদনকারীর সমপরিমাণ সওয়াব লাভ হয় । ” ( ইবনে হিলা ) অন্য বর্ণনায় আছে , “ কল্যাণের প্রতি পথনির্দেশক কল্যাণ সম্পাদনকারীরই তানুরূপ । ” ( বাফার , স হ তারগীব ১১১-৫ ) যে মানুষকে আল্লাহর ওয়াস্তে আল্লাহর দিকে আহবান করবে , তার সওয়াব অবশ্যই অজ , অবশ্যই অসংখ্য । পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ করে না , সে শাস্তিযােগ্য তাপরাধী হতে পারে । যেহেতু সে সেই আদেশ অমান্য করে , যে আদেশ মহান আল্লাহ তার নবীকে দিয়েছেন , অর্থাৎ , হে রসূল ! তােমার প্রতিপালকের নিকট হতে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে , তা প্রচার কর । যদি তা না কর , তবে তাে তুমি তার বার্তা প্রচার করলে না । ( মাইদহে ৬৩ ) সে ব্যক্তি ইলম গােপন করার অপরাধে জড়িয়ে যেতে পারে , অথচ তার শাস্তি ভয়ানক । মহান আ T ই বলেছেন , ولتكن منكم أمة يدعون إلى الخير ويأمرون بالمعروف وينهون عن الشكر وأولئك هم }( سورة آل عمر) অর্থাৎ , ( স্মরণ কর ) যাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছিল , আল্লাহ তাদেরনিকট প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন যে , তােমরা তা ( কিতাব ) স্পষ্টভাবে মানুষের কাছে প্রকাশ করবে এবং তা গােপন করবে না । এর পরও তারা তা পৃষ্ঠের পিছনে নিক্ষেপ করে ( অগ্রাহ্য করে ) ও তা স্বল্পমূল্যে বিক্রয় করে । সুতরাং তারা যা ক্রয় করে , তা কত নিকৃষ্ট । ( আলে ইমরানঃ ১৮৭ ) অর্থাৎ , আমি যে সব স্পষ্ট নিদর্শন ও পথ - নির্দেশ অবতীর্ণ করেছি । মানুষের জন্য স্পষ্টভাবে আমি কিতাবে ব্যক্ত করার পরও যারা ঐ সকল গােপন করে , আল্লাহ তাদেরকে অভিশাপ দেন এবং অভিশাপকারীরাও তাদেরকে অভিশাপ দেয় । ( বাক্বারাহঃ ২৫৯ ) রাসূলুল্লাহ ৪৯ বলেছেন , “ যাকে ধর্মীয় জ্ঞান বিষয়ক কোন কথা জিজ্ঞাসা করা হয় , আর সে ( যদি উত্তর না দিয়ে ) তা গােপন করে , কিয়ামতের দিন তাকে ( জাহান্নামের ) আগুনের লাগাম পরানাে হবে । ” ( আবু দাউদ , তিরমিযী ) সৎকাজের

মঙ্গলবার, ২ মার্চ, ২০২১

একটি পরিবার, সমাজ, দল ও রাষ্ট্র নিখুঁতভাবে পরিচালনা করার জন্য দরকার হলো যোগ্য নেতৃত্বের। যার পরামর্শ ও দিকনির্দেশনায় পরিচালিত হবে পরিবার, সমাজ, দল বা রাষ্ট্রের লোকজন। কারণ যোগ্য ও আদর্শ নেতৃত্ব ছাড়া কোনো কাজে সফলতা আসে না। নেতার আনুগত্য মেনে চললে সব ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়িয়ে শান্তির পথে আগানো সম্ভব। ইসলাম নেতৃত্ব মানার প্রতি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছে। এক হাদিসে নেতাকে ঢালস্বরূপ বলে অভিহিত করা হয়েছে। ইসলাম নেতার জন্যও বেশ কিছু নির্দেশনা প্রদান করেছে। এই নির্দেশনা মোতাবেক আল্লাহ ও তার রাসুল [সা.] কর্তৃক নির্ধারিত সীমার মধ্যে অবস্থানকারী নেতার আনুগত্য প্রকাশ অপরিহার্য ঘোষণা করেছে, যেমন অপরিহার্য ঘোষণা করেছে আল্লাহ ও তার রাসুলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ। অবশ্য যৌক্তিক বা আদর্শিক মতপার্থক্য দেখা দিলে নেতৃত্ব ও পরিচালিত সবাইকেই আল্লাহ ও তার রাসুলের দিকে

প্রত্যাবর্তন করার কথাও বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কোরানে কারিমে ইরশাদ হচ্ছে, হে ইমানদার লোকেরা, আনুগত্য কর আল্লাহ এবং তার রাসুলের আর সেসব লোকেরও, যারা তোমাদের মধ্যে সামগ্রিক দায়িত্বশীল। অতঃপর তোমাদের মধ্যে যদি কোনো ব্যাপারে মতপার্থক্য সৃষ্টি হয়, তখন ব্যাপারটা আল্লাহ ও রাসুলের দিকে ফিরিয়ে দাও। যদি তোমরা সত্যিই আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ইমানদার হয়ে থাক তাহলে এটি সঠিক কর্মনীতি আর পরিণতির দিক থেকেও উত্তম। [সুরা আন নিসা : ৫৯] নেতার আনুগত্য প্রসঙ্গে হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.] বলেছেন, মুমিন ব্যক্তির জন্য [আমিরের] কথা শোনা ও মানা অপরিহার্য। যেসব কথা পছন্দ হয় না সেগুলোও, যতক্ষণ তিনি আল্লাহ ও রাসুলের বিধানের বিরোধী কোনো হুকুম না দেবেন। অবশ্য যখনই তিনি আল্লাহ ও রাসুলের বিধানের বিরোধী কোনো হুকুম দেবেন, তা শোনাও যাবে না, মানাও যাবে না। বোখারি ও মুসলিম উপরোক্ত কোরানের আয়াত ও হাদিস থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, ইসলামে নেতৃত্ব ও কর্তৃত্বের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ স্বয়ং আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করারই সমতুল্য। পক্ষান্তরে আল্লাহর ও রাসুলের অনুসারী থাকা সত্ত্বেও নেতাকে অমান্য করা স্বয়ং আল্লাহ ও রাসুলকে অমান্য করার সমতুল্য। বস্তুত নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্যবিহীন জীবন সত্যিকার ইসলামী জীবন নয়। সে জীবনে সফলতাও অসম্ভব। মাওলানা মিরাজ রহমান 12123

সোমবার, ১ মার্চ, ২০২১

নেতা 2

 আবদুল্লাহ আফফান: একজন আদর্শ প্রার্থীর জন্য কিছু গুনাবলী অপরিহার্য । যা প্রার্থীকে নেতৃত্ব দিতে সাহায্য করবে। এবং তার মাধ্যমে দেশ ও জাতি সুফল পাবে। দেশে সুখ ও আনন্দের জোয়ার বইবে। এমন কিছু গুনাবলীর তালিকা দেয়া হলো


১. প্রার্থীর মধ্যে নেতৃত্বের মােহ থাকতে পারবে না। সে কাজ করবে দেশ ও জাতির স্বার্থে, ব্যক্তি স্বার্থে নয়। নেতৃত্বের প্রতি মােহ থাকলে মানুষ ব্যক্তি স্বার্থ ত্যাগ করে বৃহত্তর স্বার্থ রক্ষার তাগিদে কাজ করতে পারে না।


২. প্রার্থীর মধ্যে বিনয় থাকতে হবে। কথা-বার্তা, আচার-আচরণে বিনয় না থাকলে বরং অহংকার থাকলে সেরূপ নেতাকে কেউ মনে প্রাণে গ্রহণ

করতে চায় না।


৩, সমস্যা ও সংকটের মুহূর্তে প্রার্থীর অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে,

যাতে দলীয় সদস্যরা নেতাকে স্বার্থপর বা ভীরু ভাবতে না পারে কিংবা | নিজেদেরকে যেন তারা অসহায় না ভাবে।


৪,’ অনুসারী ও দলীয় সদস্যদের প্রতি সহানুভূতি থাকতে হবে এবং তাদের | সুবিধা-অসুবিধা ও আশা-আকাংখার খোঁজ-খবর রাখতে হবে।


৫. ভালবাসা দিতে ও ভালবাসা নিতে পারার গুণ থাকতে হবে। এরূপ হলে

প্রার্থীর উপস্থিতি কর্মী ও দলীয় সদস্যদের কাছে কাম্য হবে এবং নেতা | কর্মীদের মন জয় করতে পারবেন।


৬. প্রার্থীর মধ্যে বুদ্ধিমত্তা এবং সমস্যা ও তার সমাধান সম্বন্ধে পরিজ্ঞান

থাকতে হবে, যাতে তিনি পরিবেশ, পরিস্থিতি ও সমস্যার নানা দিক বিশ্লেষণ পূর্বক যথাযথ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।


৭. প্রার্থীর আদর্শস্থানীয় হতে হবে, যাতে তার স্বভাব-চরিত্র ও নীতি

নৈতিকতা দেখে তার প্রতি শ্রদ্ধাবোেধ জাগ্রত হয় এবং অনুসারীরা আদর্শচ্যুত হওয়ার দুঃসাহস না পায়। কেননা এরূপ নেতার নিকট আদর্শহীনতা প্রশ্রয়

পাবে না ।


৮, প্রার্থীর চরমপন্থী হবেন না, নিজস্ব মতামত চাপিয়ে দেয়ার জন্য গো ধরবেন না বরং প্রয়ােজনের তাগিদে মূল আদর্শ বহাল রেখে নীতি নির্ধারণ ও পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে আপােষের মনােভাব নিয়ে চলবেন।

12

সালাত

c

#include int main() { int i,n,l,u,p,sum; printf("enter lower & upper limit"); scanf("%d%d",&l,&u)...