বুধবার, ৩ মার্চ, ২০২১

দাওয়াতী কাজের মহত্ত্ব

 দাওয়াতী কাজের বড় মহত্ত্ব রয়েছ ইসলামে।যেহেতু এ কাজ হল মহ্ত লোকের কাজ। দায়ী দাওয়াত দেয় সব চেয়ে বড় যিনি ,তার দিকে । অতএব তার একাজ অবশ্যই বড় । সে নিজ কোথা দিয়ে আহব্বান করে তাঁর দিকে ,যিনি আকবার অ আজিম ,আলা অ আজাল্ল । অতএব তার কথা সব চেয়ে উত্তম শ্রেষ্ঠ । মহান আল্লাহ বলছেন,

        "যে ব্যাক্তি আল্লাহর দিকে মানুষ আহব্বান করে,সৎ কাজ করে এবং বলে 'আমি তো আত্মসমর্পণ কারী (মুসলিম)' তার অপেক্ষা কথায় উত্তম আর কোন ব্যাক্তি?"(সূরা:হা-মিম সাজদাহ:33)

  দাওয়াত দেওয়ার কাজ সাদ্ধ অনুযায়ী  অজিব।মহান আল্লাহ তার নাবিকে দাওয়াত দিতে আদেশ করেছিলেন ।আর সে আদেশ সকল উম্মতের জন্য। মহিলা পুরুষ আবাল ব্রিদ্ধ-বনিতা নির্বিশেষে সকলের জন্য।মজআন আল্লাহ বলেন,https://amzn.to/2NPeLsE

           "তুমি মানুষ কে তোমার প্রতিপালকের দিকে আহব্বান করো হিক্মাত অ সদুপদেশ দ্বারা এবং তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করো সদ্ভাবে।নিশ্ছই তোমার প্রতিপালক ,তার পথ ছেড়ে কে বিপথগামি হয় ,সে বিষয়ে সবিশেষ অবহিত এবং কে সপথে আছে তাও স বিশেস অবহিত।"(সূরা:নাহলে;:125)

তুমি তাদেরকে তােমার প্রতিপালকের দিকে আহবান কর । নিশ্চয় তুমি সৎم পথেই প্রতিষ্ঠিত। ( হাজ্জঃ৬৭) ولا يدئك عن آيات الله بعد إذ أنزلت إليك وادع إلى ربك ولا تكون من المشركين } ( ۸۷ ) سورة القصص অর্থাৎ , তােমার প্রতি আল্লাহর আয়াত অবতীর্ণ করার পর ওরা যেন তােমাকে কিছুতেই সেগুলি হতে বিমুখ না করে ফেলে । তুমি তােমার প্রতিপালকের দিকে তাহবান কর এবং কিছুতেই অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হয়াে না । ( সুরা:ক্বাস্বাস: ৮৭ ) দাওয়াতের কাজ আম্বিয়ার কাজ , রসূলগণের বৃত্তি , তাদের বিনই ছিল দাওয়াতী জীবন । মহান আল্লাহ বলেন ادع إلى سبيل ربك بالحكمة والموعظة الحسنة وجادلهم بالت هي أحسن إن ربك هو أعلم بمن ضل عن سبيله وهو أعلم بالمهتدين } ( ۱۲۰ ) النحل । অর্থাৎ , অবশ্যই আমি প্রত্যেক জাতির মধ্যে রসূল পাঠিয়েছি এই নির্দেশ দিয়ে যে , তােমরা আল্লাহর উপাসনা কর ও তাগূত থেকে দূরে থাক । অতঃপর তাদের কতককে আল্লাহ সৎপথে পরিচালিত করেন এবং তাদের কতকের উপর ভ্রষ্টতা অবধারিত হয় । সুতরাং তােমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ করে দেখ , যারা সত্যকে মিথ্যা বলেছে তাদের পরিণাম কী হয়েছে । ( নাহল : ৩৬ ) এ মহান কাজ নবীর অনুসারীদেরও । যা নবীকে নবী বলে মানে এবং মানার মতাে মানে , তারা সব কাজে যথাসাধ্য অনুসরণ করে । মহান আল্লাহ বলেন , قل هذه سبيلي أدعو إلى الله على بصيرة أنا ومن اتبعني وسبحان الله وما أنا من المتر كين } ( ۱۰۸ ) سورة يوسف » অর্থাৎ , তুমি বল , এটাই আমার পথ । তাড়াহর প্রতি মানুষকে আহবান করি সজ্ঞানে আমি এবং আমার অনুসারিগণও । আঃহ পবিত্র । আর আমি অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত নই । (সূরা; উসুফ:108) আরো বলেন, হে আমার সম্প্রদায় ! কি আশ্চর্য ! আমি তােমাদের আহবান করছি মুক্তির দিকে ; আর তােমরা আমাকে আহবান করছ জাহান্নামের দিকে । তােমরা আমাকে আহবান করছ , যাতে আমি আল্লাহকে অস্বীকার করি এবং এমন কিছুকে তার সমকক্ষ স্থির করি , যার সম্বন্ধে আমার কোন জ্ঞান নেই , পক্ষান্তরে আমি তােমাদেরকে আহবান করছি পরাক্রমশালী পরম ক্ষমাশীল আল্লাহর দিকে । ( মু'মিনঃ ৪১-৪২ ) না , সবাই পারেনা । এক এক মানুষের এক এক রকম পেশা, এক এক রকম নেশা। কাউকে ব্যবসা করতে হবে , আর সেই ব্যবসার ফাকেই দাওয়াতের কাজ হবে । তবে ব্যবসা তার পেশা । কেউ মুজাহিদ হবে , আল্লাহর রাস্তায় বিভিন্ন জিহাদ ও সংগ্রাম করবে । জিহাদই তার পেশা । কেউ পেশাদার চাষী হবে , ইঞ্জিনিয়ার হবে , বিচারপতি হবে , চিকিৎসক হবে , আর পেশার মাঝে সাধ্যানুসারে দাওয়াতী কাজ করবে । কেউ ফকীহ হবে । দ্বিীনী ইলম , দর্স - তাস্রিদ ও ফিকহই হবে তার পেশা । অর্থাৎ , বিশ্বাসীদের জন্য সঙ্গত নয় যে , তারা ( জিহাদের জন্য ) সবাই একত্রে বের হয়ে পড়ে , সুতরাং তাদের প্রত্যেকটি বড় দল হতে এক একটি ছােট দল বহির্গত হয় না কেন , যাতে অবশিষ্ট লােক ধর্মজ্ঞান অর্জন করতে থাকে এবং যাতে তারা নিজ সম্প্রদায়ের নিট ফিরে এলে তাদেরকে সতর্ক করতে পারে । যাতে তারা সাবধান হতে পারে । ( তাওবাহঃ ১২২ ) ইলম অর্জন করে কেউ দাঈ হবে , দাওয়াতের কাজই হবে তার পেশা ।। . * 5 # 19 ) অর্থাৎ , তােমাদের মধ্যে এমন একটি দল থাকা উচিত , যারা ( লােককে ) কল্যাণের দিকে ত্যাহবান করবে এবং সৎকার্যের নির্দেশ দেরে ও অসৎ কার্য থেকে নিষেধ করবে । আর এ সকল লােকই হারে সফলকাম । ( আলে ইমরানঃ ১০৪ ) যে কাজে আল্লাহর তাদেশ , সে কাজের মাহাত্ম্য কি কম বলা যায় ? মহানবী ৪ খায়বারের দিন আলী বিন আবী তালেব - কে বলেছিলেন , “ তুমি ধীর - স্থিরভাবে যাত্রা করে তাদের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে উপস্থিত হও । অতঃপর তাদেরকে ইসলামের দিকে আহবান কর এবং ইসলামে তাদের উপর মহান আল্লাহর কী কী অধিকার এসে বর্তাবে , তা তাদেরকে অবহিত কর । আল্লাহর কসম ! তোমার মাধ্যমে আল্লাহ যদি একটি লােককেও হিদায়াত করেন , তাহলে তা তােমার জন্য লাল উটনী ( আরবের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ ) অপেক্ষ । উত্তম । ” ( বুখারী ৩৭৫৪ মুসলিম ২৪০৬ নং ) পাওয়াতের কাজ সফল হলে , তাতে রয়েছে বহুগুণ সওয়াব । কেউ যদি দাওয়াতের মাধ্যমে একটি বেনামাযীকে নামাযী বানায় , তাহলে দাঈ ঐ নাম্যহরি নামাযের সওয়াব পাবে । কেউ যদি দাওয়াতের মাধ্যমে কোন বেরােযাদারকে রােযাদার বানায় , তাহলে দাঈও রােযাদারের রো । রাখার সওয়াব পাবে । কেউ যদি দাওয়াতের নামে কোন লোককে হাজী বানায় , তাহলে দাও হজের সওয়াব পাবে । অনুরূপ সকল সংকসে ক্ষেত্রে এই বিধান । আল্লাহর রসূল * বলেছেন , “ যে ব্যক্তি সংপণের দিকে আহবান করে ( দাওয়াত দেয়া ) , সে ব্যক্তি ঐ পরে তানুসারীদের সমপরিমাণ সওয়াব লাভ হবে । এতে তাদের সওয়াব থেকে কিছু মাত্র কম হবে না । আর যে । ব্যক্তি অসৎ পথের দিকে আহবান করে , সেই ব্যক্তির ঐ পথের অনুসারীদের সমপরিমাণ গােনাহর ভাগী হবে । এতে তাদের গােনাহ থেকে কিছুমাত্র কম হবে না । ” ( মুসলিমঃ ২৬৭ ৫ নং প্রমুখ ) ইবনে মাসউদ ৭৯ বলেন , এক ব্যক্তি নবী -এর নিকট এসে যাত্রা করল । তিনি বললেন , “ তামার কাছে এমন কিছু নেই , মা আমি তােমাকে দান করব । তবে তুমি অমুকের নিকট যাও । ” সে ঐ লােকটির নিকট গেল । লােকটি তাকে দান করল । এ দেশে তালাহ রসূল 24 বললেন , “ যে ব্যক্তি কল্যাণের প্রতি পথনির্দেশ করে , তার জন্য ঐ কল্যাণ সম্পাদনকারীর সমপরিমাণ সওয়াব লাভ হয় । ” ( ইবনে হিলা ) অন্য বর্ণনায় আছে , “ কল্যাণের প্রতি পথনির্দেশক কল্যাণ সম্পাদনকারীরই তানুরূপ । ” ( বাফার , স হ তারগীব ১১১-৫ ) যে মানুষকে আল্লাহর ওয়াস্তে আল্লাহর দিকে আহবান করবে , তার সওয়াব অবশ্যই অজ , অবশ্যই অসংখ্য । পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ করে না , সে শাস্তিযােগ্য তাপরাধী হতে পারে । যেহেতু সে সেই আদেশ অমান্য করে , যে আদেশ মহান আল্লাহ তার নবীকে দিয়েছেন , অর্থাৎ , হে রসূল ! তােমার প্রতিপালকের নিকট হতে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে , তা প্রচার কর । যদি তা না কর , তবে তাে তুমি তার বার্তা প্রচার করলে না । ( মাইদহে ৬৩ ) সে ব্যক্তি ইলম গােপন করার অপরাধে জড়িয়ে যেতে পারে , অথচ তার শাস্তি ভয়ানক । মহান আ T ই বলেছেন , ولتكن منكم أمة يدعون إلى الخير ويأمرون بالمعروف وينهون عن الشكر وأولئك هم }( سورة آل عمر) অর্থাৎ , ( স্মরণ কর ) যাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছিল , আল্লাহ তাদেরনিকট প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন যে , তােমরা তা ( কিতাব ) স্পষ্টভাবে মানুষের কাছে প্রকাশ করবে এবং তা গােপন করবে না । এর পরও তারা তা পৃষ্ঠের পিছনে নিক্ষেপ করে ( অগ্রাহ্য করে ) ও তা স্বল্পমূল্যে বিক্রয় করে । সুতরাং তারা যা ক্রয় করে , তা কত নিকৃষ্ট । ( আলে ইমরানঃ ১৮৭ ) অর্থাৎ , আমি যে সব স্পষ্ট নিদর্শন ও পথ - নির্দেশ অবতীর্ণ করেছি । মানুষের জন্য স্পষ্টভাবে আমি কিতাবে ব্যক্ত করার পরও যারা ঐ সকল গােপন করে , আল্লাহ তাদেরকে অভিশাপ দেন এবং অভিশাপকারীরাও তাদেরকে অভিশাপ দেয় । ( বাক্বারাহঃ ২৫৯ ) রাসূলুল্লাহ ৪৯ বলেছেন , “ যাকে ধর্মীয় জ্ঞান বিষয়ক কোন কথা জিজ্ঞাসা করা হয় , আর সে ( যদি উত্তর না দিয়ে ) তা গােপন করে , কিয়ামতের দিন তাকে ( জাহান্নামের ) আগুনের লাগাম পরানাে হবে । ” ( আবু দাউদ , তিরমিযী ) সৎকাজের

মঙ্গলবার, ২ মার্চ, ২০২১

একটি পরিবার, সমাজ, দল ও রাষ্ট্র নিখুঁতভাবে পরিচালনা করার জন্য দরকার হলো যোগ্য নেতৃত্বের। যার পরামর্শ ও দিকনির্দেশনায় পরিচালিত হবে পরিবার, সমাজ, দল বা রাষ্ট্রের লোকজন। কারণ যোগ্য ও আদর্শ নেতৃত্ব ছাড়া কোনো কাজে সফলতা আসে না। নেতার আনুগত্য মেনে চললে সব ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়িয়ে শান্তির পথে আগানো সম্ভব। ইসলাম নেতৃত্ব মানার প্রতি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছে। এক হাদিসে নেতাকে ঢালস্বরূপ বলে অভিহিত করা হয়েছে। ইসলাম নেতার জন্যও বেশ কিছু নির্দেশনা প্রদান করেছে। এই নির্দেশনা মোতাবেক আল্লাহ ও তার রাসুল [সা.] কর্তৃক নির্ধারিত সীমার মধ্যে অবস্থানকারী নেতার আনুগত্য প্রকাশ অপরিহার্য ঘোষণা করেছে, যেমন অপরিহার্য ঘোষণা করেছে আল্লাহ ও তার রাসুলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ। অবশ্য যৌক্তিক বা আদর্শিক মতপার্থক্য দেখা দিলে নেতৃত্ব ও পরিচালিত সবাইকেই আল্লাহ ও তার রাসুলের দিকে

প্রত্যাবর্তন করার কথাও বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কোরানে কারিমে ইরশাদ হচ্ছে, হে ইমানদার লোকেরা, আনুগত্য কর আল্লাহ এবং তার রাসুলের আর সেসব লোকেরও, যারা তোমাদের মধ্যে সামগ্রিক দায়িত্বশীল। অতঃপর তোমাদের মধ্যে যদি কোনো ব্যাপারে মতপার্থক্য সৃষ্টি হয়, তখন ব্যাপারটা আল্লাহ ও রাসুলের দিকে ফিরিয়ে দাও। যদি তোমরা সত্যিই আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ইমানদার হয়ে থাক তাহলে এটি সঠিক কর্মনীতি আর পরিণতির দিক থেকেও উত্তম। [সুরা আন নিসা : ৫৯] নেতার আনুগত্য প্রসঙ্গে হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.] বলেছেন, মুমিন ব্যক্তির জন্য [আমিরের] কথা শোনা ও মানা অপরিহার্য। যেসব কথা পছন্দ হয় না সেগুলোও, যতক্ষণ তিনি আল্লাহ ও রাসুলের বিধানের বিরোধী কোনো হুকুম না দেবেন। অবশ্য যখনই তিনি আল্লাহ ও রাসুলের বিধানের বিরোধী কোনো হুকুম দেবেন, তা শোনাও যাবে না, মানাও যাবে না। বোখারি ও মুসলিম উপরোক্ত কোরানের আয়াত ও হাদিস থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, ইসলামে নেতৃত্ব ও কর্তৃত্বের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ স্বয়ং আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করারই সমতুল্য। পক্ষান্তরে আল্লাহর ও রাসুলের অনুসারী থাকা সত্ত্বেও নেতাকে অমান্য করা স্বয়ং আল্লাহ ও রাসুলকে অমান্য করার সমতুল্য। বস্তুত নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্যবিহীন জীবন সত্যিকার ইসলামী জীবন নয়। সে জীবনে সফলতাও অসম্ভব। মাওলানা মিরাজ রহমান 12123

সোমবার, ১ মার্চ, ২০২১

নেতা 2

 আবদুল্লাহ আফফান: একজন আদর্শ প্রার্থীর জন্য কিছু গুনাবলী অপরিহার্য । যা প্রার্থীকে নেতৃত্ব দিতে সাহায্য করবে। এবং তার মাধ্যমে দেশ ও জাতি সুফল পাবে। দেশে সুখ ও আনন্দের জোয়ার বইবে। এমন কিছু গুনাবলীর তালিকা দেয়া হলো


১. প্রার্থীর মধ্যে নেতৃত্বের মােহ থাকতে পারবে না। সে কাজ করবে দেশ ও জাতির স্বার্থে, ব্যক্তি স্বার্থে নয়। নেতৃত্বের প্রতি মােহ থাকলে মানুষ ব্যক্তি স্বার্থ ত্যাগ করে বৃহত্তর স্বার্থ রক্ষার তাগিদে কাজ করতে পারে না।


২. প্রার্থীর মধ্যে বিনয় থাকতে হবে। কথা-বার্তা, আচার-আচরণে বিনয় না থাকলে বরং অহংকার থাকলে সেরূপ নেতাকে কেউ মনে প্রাণে গ্রহণ

করতে চায় না।


৩, সমস্যা ও সংকটের মুহূর্তে প্রার্থীর অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে,

যাতে দলীয় সদস্যরা নেতাকে স্বার্থপর বা ভীরু ভাবতে না পারে কিংবা | নিজেদেরকে যেন তারা অসহায় না ভাবে।


৪,’ অনুসারী ও দলীয় সদস্যদের প্রতি সহানুভূতি থাকতে হবে এবং তাদের | সুবিধা-অসুবিধা ও আশা-আকাংখার খোঁজ-খবর রাখতে হবে।


৫. ভালবাসা দিতে ও ভালবাসা নিতে পারার গুণ থাকতে হবে। এরূপ হলে

প্রার্থীর উপস্থিতি কর্মী ও দলীয় সদস্যদের কাছে কাম্য হবে এবং নেতা | কর্মীদের মন জয় করতে পারবেন।


৬. প্রার্থীর মধ্যে বুদ্ধিমত্তা এবং সমস্যা ও তার সমাধান সম্বন্ধে পরিজ্ঞান

থাকতে হবে, যাতে তিনি পরিবেশ, পরিস্থিতি ও সমস্যার নানা দিক বিশ্লেষণ পূর্বক যথাযথ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।


৭. প্রার্থীর আদর্শস্থানীয় হতে হবে, যাতে তার স্বভাব-চরিত্র ও নীতি

নৈতিকতা দেখে তার প্রতি শ্রদ্ধাবোেধ জাগ্রত হয় এবং অনুসারীরা আদর্শচ্যুত হওয়ার দুঃসাহস না পায়। কেননা এরূপ নেতার নিকট আদর্শহীনতা প্রশ্রয়

পাবে না ।


৮, প্রার্থীর চরমপন্থী হবেন না, নিজস্ব মতামত চাপিয়ে দেয়ার জন্য গো ধরবেন না বরং প্রয়ােজনের তাগিদে মূল আদর্শ বহাল রেখে নীতি নির্ধারণ ও পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে আপােষের মনােভাব নিয়ে চলবেন।

12

নেতা

 পৃথিবী সৃষ্টির শুরু থেকেই নেতৃত্বের ধারা চলে আসছে। আল্লাহ তায়ালা কখনই এই পৃথিবীকে নেতৃত্বশূন্য ছেড়ে দেননি। তিনি যুগে যুগে যেসব নবী-রাসুল (আ.) পাঠিয়েছেন, যারা মানবজাতিকে হেদায়াত ও মুক্তির পথপ্রদর্শন করেছেন, তারাই মানবজাতির সামনে নেতৃত্বের আদর্শ। পৃথিবীর অন্যান্য খ্যাতিমান যশস্বী ব্যক্তিদের সঙ্গে নবী-রাসুলদের পার্থক্য হলো, নবী-রাসুলরা ছিলেন প্রত্যাদেশপ্রাপ্ত এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে নিয়োজিত। মানবজাতির সত্যিকারের কল্যাণের পথ তারাই নির্মাণ করে গেছেন। শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) হলেন মানবজাতির সামনে সর্বশেষ আদর্শ। মহাবিপ্লবের মহানায়ক হিসেবে তিনি নেতৃত্বের এক অসাধারণ নজির স্থাপন করে গেছেন। এখন তার আদর্শই আমাদের নেতাদের চলার পাথেয়।


প্রকৃত নেতারা সত্যিকারার্থেই সবসময় মানবকল্যাণে সক্রিয় ও সচেতন থাকেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তাদের মধ্যে কিছু লোককে অন্য কিছু লোকের ওপর আমিই প্রাধান্য দিয়েছি, যেন তারা পরস্পর থেকে কাজ নিতে পারে। আর আপনার আল্লাহর রহমত ওই ধনসম্পদ থেকে অধিক মূল্যবান যা (ধনবানরা) দুই হাতে সংগ্রহ করছে।’ (সুরা যুখরুফ : আয়াত ৩২)। অন্য আয়াতে তিনি প্রাধান্যপ্রাপ্ত লোকদের কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ‘বস্তুত আল্লাহর কাছে তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক সম্মানিত সে, যে তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে মুত্তাকী বা নীতিপরায়ণ। নিঃসন্দেহে আল্লাহ সব বিষয়ে জানেন এবং সব বিষয়ে অবহিত।’ (সুরা হুজুরাত : আয়াত ১৩)


আরবিতে একটি প্রবাদ আছে, ‘সাইয়িদুল কওমি খাদিমুহুম’, অর্থাৎ ‘জাতির নেতারা তাদের খাদেম বা সেবক’। জনগণের ওপর কর্তৃত্ব করার জন্য নয় বরং সমাজের সেবা করে সুখে-দুঃখে তাদের পাশে থাকবেন, তাদের সমস্যা সমাধানে ভ‚মিকা পালন করবেন এবং জনগণের আস্থা অর্জন করে নেতারা তাদের দায়িত্ব পালন করবেন। নেতা কোনো অবস্থায়ই তার অধীনস্থ লোকদের মধ্যে বৈষম্য করবেন না। সবার সঙ্গে ইনসাফভিত্তিক আচরণ করবেন। ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-জাতীয়তা বা অঞ্চল নির্বিশেষে সবাই নেতার কাছ থেকে ইনসাফ পাবেন। এমনকি শত্রæর প্রতি ইনসাফের আচরণ করতে নির্দেশ করে ইসলাম।


পবিত্র কোরআনের ঘোষণা, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে এই আদেশ দিচ্ছেন যে, তোমরা আমানতসমূহ এগুলোর পাওনাদারদের কাছে পৌঁছে দাও। আর লোকদের মধ্যে যখন (কোনো বিষয়ে) বিচার করবে তখন ইনসাফের সঙ্গে করবে।’ (সুরা নিসা : আয়াত ৫৮)। আরও ঘোষণা হয়েছে, ‘হে ঈমানদাররা! তোমরা আল্লাহর (বিধিবিধানের) পূর্ণ প্রতিষ্ঠাকারী ও ইনসাফের সাক্ষ্যদাতা হও। আর কোনো সম্প্রদায়ের শত্রুতা যেন তোমাদেরকে সুবিচার বর্জনে প্ররোচিত না করে। তোমরা সুবিচার কর, এটাই তাকওয়ার বেশি কাছাকাছি। আল্লাহকে ভয় করতে থাক। নিশ্চয়ই তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে অবগত।’ (সুরা মায়েদা : ৮)


ইসলামের দৃষ্টিতে নেতাদের কিছু গুণ থাকা জরুরি। যেমন একজন নেতার মানুষের প্রতি ভালোবাসা থাকবে। হজরত আওফ ইবনে মালিক রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, ‘তোমাদের উত্তম নেতা হলো তারা, যাদেরকে তোমরা ভালোবাস এবং তারাও তোমাদেরকে ভালোবাসে। তারা তোমাদের জন্য দোয়া করে, তোমরাও তাদের জন্য দোয়া কর। আর তোমাদের নিকৃষ্ট নেতা হলো তারা, যাদেরকে তোমরা ঘৃণা কর এবং যারা তোমাদেরকে ঘৃণা করে আর তোমরা যাদের ওপর অভিশাপ বর্ষণ কর। সাহাবায়ে কেরামের পক্ষ থেকে জিজ্ঞেস করা হলো, হে রাসুল! আমরা কি তলোয়ারের সাহায্যে তাদের মোকাবেলা করব? তিনি বললেন, না, যতক্ষণ না তারা তোমাদের মধ্যে নামাজ কায়েম করতে থাকবে। তোমাদের নেতৃস্থানীয় লোকদের মধ্যে যদি তোমরা এমন কোনো জিনিস দেখতে পাও যা তোমরা অপছন্দ কর, তবে তোমরা তার কাজ ঘৃণা করতে থাক। কিন্তু তার আনুগত্য থেকে হাত টেনে নিও না। (মুসলিম)


নেতারা উদার, মহৎ ও ক্ষমাশীল হবেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘হে নবী! এটা আল্লাহর সবচেয়ে বড় অনুগ্রহের বিষয় যে, আপনি এসব লোকের জন্য খুবই নম্র স্বভাবের হয়েছেন। আপনি যদি উগ্র স্বভাব ও পাষাণ হৃদয়ের অধিকারী হতেন, তবে এসব লোক আপনার চারপাশ থেকে দূরে সরে যেত, অতএব তাদের ক্ষমা করে দিন। তাদের জন্য মাগফেরাতের দোয়া করুন এবং ইসলামের কাজকর্মে তাদের সঙ্গে পরামর্শ করুন। অবশ্য কোনো বিষয়ে আপনার মতো সুদৃঢ় হয়ে গেলে আল্লাহর ওপর ভরসা করুন। বস্তুত আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন যারা তার ওপর ভরসা করে কাজ করে।’ (সুরা আলে ইমরান : আয়াত ১৫৯)। মক্কা বিজয়ের পর রাসুলুল্লাহ (সা.) ক্ষমার যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন, বিশ^ ইতিহাসে এমন আরেকটি খুঁজে পাওয়া যাবে না।


নেতারা দায়িত্বশীল ও কর্তব্যপরায়ণ হবেন। তাদের ওপর দায়িত্ব এলে তিনি সর্বোত্তমভাবে তা পালনের চেষ্টা করেন। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমার এ ঘরে রাসুলুল্লাহকে (সা.) দোয়া করতে শুনেছি, হে আল্লাহ! যে ব্যক্তি আমার উম্মতের যেকোনো কাজের দায়িত্বশীল নিযুক্ত হয়, এরপর সে লোকদের কষ্টের মধ্যে ফেলে, আপনিও তাকে কষ্টের মধ্যে ফেলে দিন। আর যে ব্যক্তি আমার উম্মতের যেকোনো বিষয়ে দায়িত্বশীল নিযুক্ত হয় এবং লোকদের সঙ্গে নম্র ব্যবহার করে, আপনিও তার সঙ্গে নম্র ব্যবহার করুন।’ (মুসলিম : ৪৭২২)


যেহেতু ইসলামে ধর্ম ও রাজনীতি আলাদা নয়, তাই রাজনীতি ও রাষ্ট্রীয় নেতাদেরও সেসব গুণের অধিকারী হওয়া জরুরি। তা ছাড়া নেতারা হবেন খোদাভীরু ও আল্লাহর প্রেমিক। উন্নত নৈতিকতা ও নির্মল চরিত্রের অধিকারী। গঠনমূলক সমালোচনা, বাক-স্বাধীনতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকারী। জ্ঞানী, প্রজ্ঞাবান ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন। দৃঢ়চিত্ত ও সাহসী। অসাধারণ সততা ও যোগ্যতার অধিকারী। চিন্তাশীল ও উদ্ভাবনী শক্তির অধিকারী। নম্র, ভদ্র, বিনয়ী ও সুমধুর ব্যবহারের অধিকারী। পরিস্থিতি মোকাবেলা ও সঙ্কট ব্যবস্থাপনায় পারদর্শী। ইনসাফ ও ন্যায় বিচারের প্রতীক। অধ্যবসায়ী, সাধক ও পরিশ্রমী। নির্লোভ ও নির্মোহ। সংগঠন পরিকল্পনা ও শৃঙ্খলা বিধানে পারদর্শী। আস্থাভাজন ও অসহায়ের আশ্রয়দানকারী। উদ্যোগী ও সক্রিয়। শিক্ষানুরাগী ও শৈল্পিক মনোবৃত্তির অধিকারী। পরোপকারী ও গণমুখী। সব ব্যাপারে অগ্রগামী ও আদর্শ স্থাপনকারী।


যারা আমাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন কিংবা দেবেন, তারা ইসলাম প্রদত্ত গুণাবলি অর্জন করলে এবং যথাযথ দায়িত্ব পালনে এগিয়ে এলে দেশের আরও উন্নতি ও সমৃদ্ধি আসবে ইনশাল্লাহ।
12

সালাত

c

#include int main() { int i,n,l,u,p,sum; printf("enter lower & upper limit"); scanf("%d%d",&l,&u)...